বৈদেশিক বাণিজ্য (Foreign trade)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ভূগোল ও পরিবেশ - বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বাণিজ্য | | NCTB BOOK

এক সময় বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য ছিল বেশিরভাগ কাঁচামাল রপ্তানি। বর্তমানে আমাদের রপ্তানির প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ আয় হচ্ছে তৈরি পোশাক ও নিটওয়্যার থেকে এবং দিন দিন কৃষিপণ্য রপ্তানির পরিমাণ কমে আমদানি বাড়ছে। বর্তমানে খাদ্য-শস্য ও শিল্পজাত দ্রব্য আমদানি করতে হয় এবং দেখা যায় রপ্তানির চেয়ে আমদানি দ্রব্য বেশি। আর এ সকল বৈদেশিক বাণিজ্য চলে সমুদ্রপথে। তবে জরুরিভিত্তিতেও পচনশীল দ্রব্য আকাশপথে আনা নেওয়া করা হয়।

বৈদেশিক বাণিজ্যে রপ্তানি বৃদ্ধি করে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এজন্য উৎপাদন বৃদ্ধি, পণ্যের মান উন্নয়ন, উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, রপ্তানি শুল্ক হ্রাস, পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ব্যাপক প্রচার প্রভৃতি অপরিহার্য। বাংলাদেশ চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, হংকং, তাইওয়ান প্রভৃতি দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে। বাংলাদেশের পণ্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস,কানাডা, ইতালি প্রভৃতি দেশে রপ্তানি হয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, কিন্তু মূলধন ও প্রযুক্তিবিদ্যার অভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না, ফলে আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ভারসাম্য থাকছে না।

আমদানি ও রপ্তানি পণ্য (Import and export products)

বাংলাদেশে বর্তমানে শ্রমনির্ভর শিল্পের রপ্তানি উপযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পণ্যের প্রধান আমদানিকারক দেশ হিসেবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র তালিকার শীর্ষে রয়েছে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছে জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ।

প্রধান রপ্তানি পণ্যসমূহ
১। প্রাথমিক পণ্য : হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, কাঁচা পাট, চা ও অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য ।
২। শিল্পজাত পণ্য : তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার, রাসায়নিক দ্রব্য, প্লাস্টিকসামগ্রী, চামড়া, চামড়াজাত পণ্য,হস্তশিল্প,পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, পাদুকা, সিরামিকসামগ্রী ও প্রকৌশল দ্রব্যাদি।

 অর্থবছর

রপ্তানি আয় (মিলিয়ন ইউএস ডলার)

 আমদানি ব্যয় (মিলিয়ন ইউএস ডলার)
 ২০১৫-২০১৬  ৩৪,২৫৭.১৮  ৪৩,১২২.০
 ২০১৬-২০১৭  ৩৪,৬৫৫.৯০  ৪৭,০০৫.০
 ২০১৭-২০১৮  ৩৬,৬৬৮.১৭  ৫৮,৮৬৫.০
 ২০১৮-২০১৯*  ২৭,৬৫২.৮০  ৪০,৮৯৫.০

উৎস : বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৯* (ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত)

বাংলাদেশের আমদানি ক্ষেত্রে চীন-এর অবস্থান শীর্ষে। ২০১৮-২০১৯ (ফেব্রুয়ারি) অর্থবছরে দেশের মোট আমদানির শতকরা ২৯.৪৩ ভাগ চীন থেকে আসে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভারত ও সিঙ্গাপুর।

প্রধান আমদানি পণ্যসমূহ
১। প্রধান প্রাথমিক দ্রব্যসমূহ : চাল, গম, তেলবীজ, অপরিশোধিত পেট্রোলিয়াম ও তুলা ৷
২। প্রধান শিল্পজাত পণ্যসমূহ : ভোজ্যতেল, সার, ক্লিংকার, স্টেপল ফাইবার ও সুতা।
৩। মূলধনী দ্রব্যসমূহ ।
৪। অন্যান্য পণ্য (ইপিজেড-এর সহায়ক পণ্য) ।

Content added By
Promotion